IQNA

কুরআন কি বলে/২০

সংলাপ ও যোগাযোগের ভিত্তি হচ্ছে কুরআন

20:12 - July 23, 2022
সংবাদ: 3472164
তেহরান (ইকনা): খাওয়ারিজমি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রসুল রাসুলিপুর “সংলাপ, দীর্ঘস্থায়ী উপায়” সভায় সংলাপ সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা সম্পর্কে কথা বলেন।
ইসলামী গবেষক এবং খাওয়ারিজমি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রসুল রাসুলিপুর উক্ত সভায় বলেন: “আমি যে বিষয়টি বেছে নিয়েছি তা হল একটি সুসংগত সংলাপের জন্য কুরআনের আমন্ত্রণ। সূরা আল-ইমরানের ৬৪ নং আয়াতের "সাওয়া" শব্দ থেকে আমি এই বিষয়টি পেয়েছি: 
 
قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلَّا نَعْبُدَ إِلَّا اللَّهَ وَلَا نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلَا يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ
 
তুমি বল, ‘হে গ্রন্থধারীরা! এস, আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এক অভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্যে আসি, আর তা এই যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও উপাসনা করব না, কোন কিছুকে তাঁর অংশী করব না এবং আল্লাহ ব্যতীত আমাদের মধ্যে কেউ অপর কাউকে প্রতিপালক হিসেবে গ্রহণ না করে।
সূরা অলে ইমরান, আয়াত: ৬৪।
 
মনে হচ্ছে পবিত্র গ্রন্থগুলি অপরিহার্য গ্রন্থ এবং আলোচনার জন্য উপযুক্ত গ্রন্থনয়, এবং আমাদের এই গ্রন্থগুলিকে আরও বেশি ব্যবহার করা উচিত এবং এক্ষেত্রে আলোচনার কোন অবকাশ নেই। আমি এই দাবির বিরোধিতা করতে চাই এবং বলতে চাই যে এটা সত্য যে ধর্মগ্রন্থগুলিতে সংলাপের সমস্ত শর্ত নেই, তবে ধর্মগ্রন্থগুলিতে সংলাপ রয়েছে।
 
বাহ্যিক দিক থেকে “یسألونک” (তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে) শব্দটি জনগণের অনেক প্রশ্ন এবং মহানবী (সা.)এর উত্তর এবং এর মধ্যমে মাধ্যমে কথোপকথন এবং যোগাযোগের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। এই প্রশ্নোত্তরটি নিজেই সেই আচার-ব্যবহার দেখায় যা শাস্ত্র আমাদের শেখায়।
 
এটা স্বাভাবিক যে পবিত্র গ্রন্থগুলি জানার ফলে এই ধর্মগ্রন্থগুলির শিক্ষাগুলিকে তুলে ধরা হয় যা এই ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব এবং সত্যকে প্রকাশ করে এবং বাকিদের হয় আত্মসমর্পণ করতে হবে বা এর সামনে মরতে হবে। তবে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন: 
 
لَيْسَ بِأَمَانِيِّكُمْ وَلَا أَمَانِيِّ أَهْلِ الْكِتَابِ مَنْ يَعْمَلْ سُوءًا يُجْزَ بِهِ وَلَا يَجِدْ لَهُ مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
 
(কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব, পুরস্কার বা শাস্তি দান) না তোমাদের কামনায় সংঘটিত হতে পারে, আর না গ্রন্থধারীদের বাসনায়; যে কেউ মন্দ কর্ম করবে তার শাস্তি সে পাবেই এবং সে নিজের জন্য আল্লাহ ব্যতীত কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না। 
সূরা নিসা, আয়াত: ১২৩। 
 
এই আয়াতের উপর দৃষ্টিপাত করলে বোঝা যায় যে, ধর্ম কোন মাপকাঠি নয়, বরং যা মাপকাঠি তা হল আপনার কর্ম।
 
পবিত্র গ্রন্থগুলির মাধ্যমে অন্যদের সাথে কথোপকথনে প্রবেশ করা সম্ভব। এই বিষয়টি সূরা সাবার ২৪ ও ২৫ নম্বর আয়াতে অতি সুন্দর ভাবে বলা হয়েছে: 
 
۞ قُلْ مَنْ يَرْزُقُكُمْ مِنَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ  قُلِ اللَّهُ  وَإِنَّا أَوْ إِيَّاكُمْ لَعَلَىٰ هُدًى أَوْ فِي ضَلَالٍ مُبِينٍ۞ قُلْ لَا تُسْأَلُونَ عَمَّا أَجْرَمْنَا وَلَا نُسْأَلُ عَمَّا تَعْمَلُونَ
 
۞ তুমি বল, ‘আকাশমণ্ডলী ও ভূমণ্ডলী হতে কে তোমাদের জীবিকা দান করেন?’ তুমি বলে দাও, ‘আল্লাহ’; (আরও বল,) ‘নিঃসন্দেহে হয় আমরা, না হয় তোমরা সত্যপথে স্থিত অথবা প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত?’ ۞ তুমি বলে দাও, ‘না আমাদের অপরাধের জবাবদিহি তোমাদের করতে হবে, আর না তোমরা যা কর তার জবাবদিহি আমাদের করতে হবে।’ 
সূরা সাবা, আয়াত: ২৪ ও ২৫। 
 
এটা মজার বিসয় যে, নিজের কর্ম সম্পর্কে বলেন যে, আমরা কি অপরাধ করেছি, কিন্তু প্রতিপক্ষ তার সম্পর্কে বলেন যে, তুমি কি কাজ করেছ?
 
সংশ্লিষ্ট খবর
captcha