IQNA

তাফসীর ও মুফাস্সিরদের পরিচয় / ১২

রুহুল মায়ানী; আহলে সুন্নতের সবচেয়ে বিস্তারিত তাফসীর

0:02 - December 25, 2022
সংবাদ: 3473056
তেহরান (ইকনা): রুহুল মায়ানী হল আহলে সুন্নতের তাফসিরসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বিস্তৃত এবং সবচেয়ে ব্যাপক তাফসির। এই তাফসিরটি বিশ্বস্ততার সাথে অতীতের মতামত প্রকাশ করে এবং পূর্ববর্তী তাফসিরের সারাংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
মাহমুদ বিন আবদুল্লাহ আলুসির "রুহুল মায়ানী ফী তাফসীরুল কুরআনিল আযীম ওয়াস সাবয়িল মাসানী" আহলে সুন্নতের আরবি ভাষায় দীর্ঘ এবং বিশদ তাফসিরগুলির মধ্যে একটি। "রুহুল মায়ানী" একটি যুক্তিবাদী এবং ইজতিহাদমূলক তাফসির। এই তাফসির গ্রন্থে সাহিত্যিক পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে।
আলুসির তাফসীর হল সবচেয়ে বিস্তৃত তাফসীর যা ফখর রাযীর তাফসীরের পরে রচিত হয়েছে। এটি পুরানো পদ্ধতিতে লেখা হয়েছে এবং বলা যেতে পারে এটি রাযীর তাফসীরের দ্বিতীয় সংস্করণ, তবে সামান্য পরিবর্তন সহ এটি ষোল খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছিল। এই তাফসীরটি একটি দীর্ঘ এবং বিস্তারিত তাফসীরমূলক বিশ্বকোষ।
লেখক সম্পর্কে
আবু আছ-ছানা সৈয়দ মাহমুদ শাহাবুদ্দিন আফেন্দি (১২১৭-১২৭০ হি/১৮০২-১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দ) বাগদাদের একজন ফিকাহবিদ, মুফাস্সির, লেখক এবং ধর্মীয় পণ্ডিত ছিলেন। সাইয়্যেদ মাহমুদ শৈশব থেকেই তার পিতা এবং সাহিত্যের অধ্যাপকদের নিকট শিক্ষা অর্জান করেছেন এবং তার বুদ্ধিমত্তা এবং শক্তিশালী স্মৃতিশক্তির কারণে তিনি জ্ঞান অর্জনে দ্রুত অগ্রসর হন।
তৎকালীন সময়ে তিনি দ্রুত মহান ওস্তাদদের একজন হয়ে ওঠেন এবং "আল্লামা" ডাকনাম পান। তিনি একজন শাফেয়ী মাজহাবের অনসারি ছিলেন। ১৮৩২ সালে, অন্যান্য মাজহাবের ফিকাহশাস্ত্র জানার কারণে এবং সম্ভবত আবু হানিফার মতামতের দিকে ঝুঁকে পড়ার কারণে হানাফী মাযহাবের অনুসারী হয়ে ওঠেন।
লেখকের প্রেরণা
আলুসি তার তাফসিরের ভূমিকায় লিখেছেন যে শৈশব থেকেই তিনি কুরআনের রহস্য আবিষ্কার করতে চেয়েছিলেন এবং তা আল্লাহর কাছে চেয়েছিলেন। তিনি শৈশব খেলাধুলা এবং কৈশোরে লালসা ত্যাগ করে এই চিন্তায় ব্যস্ত ছিলেন।
তিনি তার যৌবনকাল কুরআন অধ্যয়নে অতিবাহিত করেন যতক্ষণ না মহান আল্লাহ তাকে এই সুযোগ দেন এবং ২০ বছর বয়সের আগে তিনি কুরআন সম্পর্কিত প্রশ্ন সম্পর্কে "দাকায়েকু আল-তাফসীর" লিখেছিলেন।
তিনি ৪৩ বছর বয়সে তাফসীর লেখা শুরু করেন এবং ১৮৫০ সালে এটি শেষ করেন এবং এর নাম দেন "রুহুল মায়ানী ফী তাফসীরুল কুরআনিল আযীম ওয়াস সাবয়িল মাসানী"।
রুহুল মায়ানী তাফসীরের বৈশিষ্ট্য
রুহুল মায়ানী হল আহলে সুন্নতের তাফসিরসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বিস্তৃত এবং সবচেয়ে ব্যাপক তাফসির। এই তাফসিরটি বিশ্বস্ততার সাথে অতীতের মতামত প্রকাশ করে এবং পূর্ববর্তী তাফসিরের সারাংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
“মাহমুদ বিন আবদুল্লাহ আলুসি” ইবনে আতিয়াহ, আবু হাইয়ান, কাশশাফ, আবু আল সৌদ, বায়দ্বাভী, ফখর রাজী এবং অন্যান্যদের মত প্রচুর তাফসীর ব্যবহার করেছেন এবং তাদের মতামত উদ্ধৃত করার সময় তিনি তাদের মতামতের সমালোচনাও করেছেন। তিনি ফখর রাজী থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছেন এবং রাযীর প্রবন্ধের কিছু অংশের সমালোচনা করেছেন।
 
captcha