IQNA

সৌদি যুবরাজকে অনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইল সফরের আমন্ত্রণ

14:35 - December 14, 2017
সংবাদ: 2604552
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানকে ইসরাইল সফরের আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তেল আবিব। মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রতিবাদে যখন বিশ্বব্যাপী তীব্র বিক্ষোভ চলছে তখন এই আমন্ত্রণ জানানো হলো।


বার্তা সংস্থা ইকনা: ইসরাইলের গোয়েন্দামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎয সৌদি দৈনিক ‘ইলাফ’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি সৌদি যুবরাজকে তেল আবিব সফরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে মোহাম্মাদ বিন সালমানকে ইহুদিবাদীদের সঙ্গে মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের আপোষ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করারও আহ্বান জানিয়েছেন ইসরাইলের গোয়েন্দামন্ত্রী।

এর আগে খবর বেরিয়েছিল, মোহাম্মাদ বিন সালমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেম সংক্রান্ত ঘোষণার প্রতি সমর্থন জানিয়ে মাহমুদ আব্বাসকে ওই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছেন।

তবে মাহমুদ আব্বাস বুধবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ওআইসির জরুরি শীর্ষ সম্মেলনে দেয়া ভাষণে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ওই সম্মেলন থেকে জেরুজালেম আল-কুদসকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী ঘোষণা করা হয়েছে। সম্মেলনে সৌদি রাজা সালমান বা তার পুত্র মোহাম্মাদ বিন সালমান অংশগ্রহণ করেননি। সম্মেলনে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে নীচু পর্যায়ের একজন সরকারি কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়।

মাহমুদ আব্বাস তার ভাষণে আরো বলেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কথিত শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করার যোগ্যতা হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

সম্প্রতি আরবি দৈনিক আল-আরাবি আল-জাদিদ খবর দিয়েছিল, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান কয়েক মাস আগে গোপনে ইসরাইল সফর করেছেন বলে ইহুদিবাদী কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন।

পর্যবেক্ষকরা সৌদি যুবরাজের তেল আবিব সফরের খবরে অবাক হননি। তারা বলছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে জোর প্রচেষ্টা সৌদি আরব চালাচ্ছে তাতে এ ধরনের সফরে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

সৌদি যুবরাজকে তেল আবিব সফরের আহ্বান ইসরাইলের

যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানকে তেল আবিব সফরে পাঠানোর জন্য সৌদি রাজার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইসরাইলের গোয়েন্দা ও পরিবহনমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।

একই সঙ্গে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সৌদি সফরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য রাজা সালমান বিন আবদুল আজিজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর সফরের মাধ্যমে সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরাইলের পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

বৃহস্পতিবার হার্জলিয়াতে বার্ষিক সম্মেলনে কাৎজ বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইল ও সৌদি আরবের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে; এজন্য যুবরাজের‍ তেল আবিব সফর করা দরকার। হার্জলিয়া সম্মেলনে ইসরাইলের নেতারা তাদের জাতীয় কৌশলগত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।

কাৎজ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সফরের সময় আমরা দেখেছি আপনারা কত চমৎকারভাবে আপ্যায়ন করতে পারেন। আপনি আপনার নতুন উত্তরাধিকারী যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানকেও পাঠাতে পারেন। তিনি একজন গতিশীল ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন উদ্যোগী মানুষ এবং তিনি নতুন কিছু করতে চান।’

ইসরাইলের এ মন্ত্রী আরো বলেন, ‘তারা জানেন কে এই ইরান। তারা জানেন, ইরানকে নিয়ে আমাদের তথ্য আদান-প্রদান করতে হবে। ফলে আপনি যুবরাজকে বৈঠকের জন্য ইসরাইলে পাঠাতে পারেন এবং আমি ওয়াদা করছি যে, আমরা তাকে সঠিকভাবে স্বাগত জানাব।’

ওই অনুষ্ঠানে ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী এভিগদোর লিবারম্যান আরব দেশগুলোর সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তিচুক্তির আগে মধ্যপন্থি সুন্নি আরব দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিচুক্তি হতে হবে। আঞ্চলিক চুক্তিই হচ্ছে সুড়ঙ্গের শেষ সীমান্তে আলোর রেখা।

তিনি বলেন, ‘গবেষণায় আমি দেখেছি পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করলে ইসরাইল বার্ষিক সাড়ে চার হাজার কোটি ডলার বাড়তি রাজস্ব আয় করবে।’ আরটিএনএন

captcha