IQNA

পবিত্র আশুরার শিক্ষা ও তাৎপর্য

22:02 - October 19, 2017
সংবাদ: 2604108
কারবালার মহাবিপ্লবের রূপকার ইমাম হুসাইন (আ.) মানবজাতির ওপর ও বিশেষ করে প্রকৃত মুমিন মুসলমানদের ওপর যে গভীর প্রভাব রাখবেন সে সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন স্বয়ং বিশ্বনবী (সা.)। তিনি বলেছেন, নিশ্চয়ই প্রত্যেক মু'মিনের হৃদয়ে হুসাইনের শাহাদতের ব্যাপারে এমন ভালবাসা আছে যে, তার উত্তাপ কখনো প্রশমিত হয় না। (মুস্তাদরাক আল-ওয়াসাইল, খণ্ড-১০, পৃষ্ঠা-৩১৮)

 বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) কেবল জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও মুক্তিকামী মানুষেরই আদর্শ ছিলেন না, সর্বোত্তম জিহাদ তথা আত্ম-সংশোধন ও পরিশুদ্ধিরও মূর্ত প্রতীক। অন্যদেরকে সৎকাজের দিকে ডাকার ও অসৎ কাজে নিষেধ বা প্রতিরোধের শর্ত হল, সবার আগে নিজেকেই পরিশুদ্ধ করা।

কবি ও উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা মাওলানা মোহাম্মদ আলী জাওহার লিখিয়াছেন; কতলে হুসাইন আসল মে মারগে ইয়াজিদ হায়, ইসলাম জিন্দা হোতা হায় হার কারবালাকে বাদ। অর্থাৎ ইমাম হুসাইনের শাহাদাত মূলত ইয়াজিদের মৃত্যু, ইসলাম পুনর্জীবিত হয় প্রতিটি কারবালার পর।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য হযরত ইমাম রেজা (আ.) তাঁর সাহাবী রাইয়ান ইবনে ইবনে শাবিবকে বলেছিলেন:

হে ইবনে শাবিব! আইয়ামে জাহিলিয়্যার যুগ তথা অজ্ঞতার যুগেও লোকেরা মহররম মাসে দমন-পীড়ন চালাত না এবং যুদ্ধ ও সংঘাতে লিপ্ত হত না। এসব ছিল সে সময় নিষিদ্ধ। অথচ (ইয়াজিদের যুগে) মুসলমানরাই এ পবিত্র মাসের ও তাদের নিজ নবী (সা.)’র প্রতি মর্যাদা দেখায়নি (কারবালার ঘটনা প্রবাহের সময়)। তারা এই মাসেই নবী(সা.)’র বংশধরকে হত্যা করেছে। .... আল্লাহ তাদের কখনও ক্ষমা করবেন না।

হে ইবনে শাবিব! তুমি যদি কাঁদতে চাও, তাহলে হুসাইনের (আ.) জন্য কাঁদ যাকে হত্যা করা হয়েছিল ভেড়ার মত (তাও পানি না দিয়ে)। তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে। তাঁর সঙ্গে হত্যা করা হয়েছিল এমন ১৮ ব্যক্তিকে বিশ্বে যাদের সমকক্ষ আর কেউ ছিল না। সাত আকাশ ও সাত জমিন তাঁর শাহাদতে শোক প্রকাশ করেছে।

হে ইবনে শাবিব! যদি তুমি ইমাম হুসাইন (আ.)’র জন্য এমনভাবে কাঁদ যে তোমার গণ্ডদেশ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে তাহলে আল্লাহ তোমার সব ছোট বড় গোনাহ মাফ করবেন তা সেইসব গোনাহর সংখ্যা যত বেশিই হোক না কেন।

হে ইবনে শাবিব! যদি তুমি নিষ্পাপ অবস্থায় মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করতে চাও তাহলে ইমাম হুসাইন (আ.)’র মাজার জিয়ারত করতে যাও।

হে ইবনে শাবিব! যদি তুমি বেহেশতে আমাদের সঙ্গে উচ্চ মর্যাদা নিয়ে থাকতে চাও তাহলে আমাদের দুঃখে দুঃখী এবং আমাদের সুখে সুখী হও।
captcha